সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ অত্র মামলার বাদীনি মোছাঃ শাহীনা বেগম (৪৬) এর মেয়ে তাসনিভা আক্তার রিংকু (১৭) আক্কেলপুর থানাধীন রাইকালি টেকনিক্যাল বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজে ১ম বর্ষে লেখাপড়া করিত। প্রতিদিনের ন্যায় ইং ২৭/১১/২০২৩ তারিখ সকাল অনুমান ০৯.৩০ ঘটিকার সময় বাদীনির মেয়ে কলেজ যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করে। ঐদিন বাদীনির মেয়ে কলেজ শেষে বাড়ীতে ফিরে না আসিলে বাদীনি তাহার মেয়েকে বিভিন্ন জায়গায় খোজা-খুজি করিতে থাকে। একপর্যায়ে ২৮/১১/২০২৩ তারিখ সকাল অনুমান ১১.০০ ঘটিকার সময় মোবাইল ফোন (ফেসবুক) মাধ্যমে বাদীনি জানতে পারেন যে, নওগাঁ সদর মডেল থানাধীন নারায়নপুর পশ্চিম পাড়াস্থ জনৈক ইসমাইল হোসেনের আলুক্ষেতের পাশে ফতেপুর হইতে ঘাট তিলকপুর গামী বাঁধের পাকা রাস্তার পূর্ব পাশের্^ তাহার মেয়ের মৃতদেহ পড়িয়া আছে। এই সংক্রান্তে নওগাঁ সদর মডেল থানায় একটি মামলা রুজু হয়। মামলা দায়ের প্রেক্ষিতে অপরাধীকে গ্রেফতারের জন্য নওগাঁ জেলার পুলিশ সুপার জনাব মুহাম্মদ রাশিদুল হক মহোদয়ের প্রত্যক্ষ দিক নির্দেশনায় নওগাঁ সদর মডেল থানার একটি চৌকশ টিম তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।
অত:পর পুলিশ সুপার (পদোন্নতি প্রাপ্ত) জনাব গাজিউর রহমান, পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল জনাব ফৌজিয়া হাবিব খান ও অফিসার ইনচার্জ মুঃ ফয়সাল বিন আহসান, পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মোঃ আব্দুল গফুর ও অত্র মামলা তদন্তকারী অফিসার এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ আব্দুল বারেক মামলাটি তদন্তাকালে ভিকটিম তাসনিভা আক্তার রিংকু এর মোবাইল নম্বর সংগ্রহ পূর্বক আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করতঃ মোঃ নাঈম হোসেন পিতা-মোঃ আলাউদ্দিন মন্ডল, সাং-মাটিয়াকুড়ি, ইউপি-তিলকপুর, থানা-আক্কেলপুর, জেলা-জয়পুরহাটকে সনাক্ত পূর্বক নওগাঁ জেলা সহ বগুড়া, রাজশাহী জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনায় আসামীর অবস্থান সনাক্ত করে গত ৩০/১১/২০২৩ তারিখ রাজশাহী জেলার পবা থানা এলাকা হতে আসামী মোঃ নাঈম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। একই তারিখে সহযোগী আসামী মোঃ আলাউদ্দিন মন্ডল (৫২), পিতা-মৃত আব্দুল আজিজ মন্ডল, সাং-মাটিয়াকুড়ি, ইউপি-তিলকপুর, থানা-আক্কেলপুর, জেলা-জয়পুরহাটকে গ্রেফতার করা হয়। প্রত্যক্ষ সাক্ষী মোঃ সবুজ হোসেন (২৪), পিতা-মোঃ খোয়াজুল ইসলাম (গ্রাম পুলিশ), সাং-খাগড়া পাড়া, ইউপি-সাহাপুর, থানা-মান্দা, জেলা-নওগাঁকে আটক করতঃ জিজ্ঞাসবাদ করে মামলার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ন তথ্য সংগ্রহ করা হয়। অতঃপর আসামী মোঃ নাঈম হোসেন (২২) ও আসামী মোঃ আলাউদ্দিন মন্ডল এবং সাক্ষী মোঃ সবুজ হোসেন গণকে বিজ্ঞ আদালতে হাজির করে ফৌঃকাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী লিপিবদ্ধ করণের ব্যবস্থা করা হয়। মামলাটি প্রাথমিক তদন্তকালে জানা যায় যে, আসামী মোঃ নাঈম হোসেন এর সহিত ভিকটিম তাসনিভা আক্তার রিংকু এর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ভিকটিম তাসনিভা আক্তার রিংকু আসামী মোঃ নাঈম হোসেন ছাড়াও একাধিক ছেলের সাথে প্রেম ভালোবাসা করিত বলে জানা যায়। আসামী মোঃ নাঈম হোসেন ভিকটিমের অবিভাবকদের একাধিকবার বিবাহের প্রস্তাব পাঠানোর পরেও ভিকটিমকে আসামী মোঃ নাঈম হোসেন এর সাথে বিবাহ না দেওয়ার কারণে গত ইং ২৭/১১/২০২৩ তারিখ আসামী মোঃ নাঈম হোসেন ভিকটিমকে বিভিন্ন প্রকার প্রলোভন দেখাইয়া কোর্ট ম্যারেজ করে বিবাহ করবে বলে নওগাঁ কোর্টের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসে। কিন্তু বর্ণিত আসামী ভিকটিমকে নওগাঁ কোর্টে না নিয়ে অজ্ঞাত একটি অটোরিক্সাতে জোরপূর্বক রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা করে। পথিমধ্যে নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর থানাধীন নওহাটা মোড় নামক স্থানে পৌঁছাইলে আসামীর সহিত উক্ত রিক্সার উপরে ভিকটিমের ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে আসামী ভিকটিমকে চলন্ত রিক্সা হইতে পাকা রাস্তার উপর ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়, যাহার ফলে ভিকটিম মাথার পিছনের ডান পার্শ্বে গুরুতর আঘাত সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম প্রাপ্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করে। ভিকটিমের মৃতদেহ প্রথমে প্রত্যক্ষ সাক্ষী মোঃ সবুজ হোসেন এর মাইকো গাড়ীতে করে এবং পরবর্তীতে আসামী মোঃ আলাউদ্দিনের অটোভ্যান যোগে আসামীদ্বয় ভিকটিমের লাশ রাতের অন্ধকারে ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস